ঢাকা   মঙ্গলবার ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

কার্নেগি মেলন-এর এআই ফোরামে যোগ দিল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি

কার্নেগি মেলন-এর এআই ফোরামে যোগ দিল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি

কার্নেগি মেলন-এর এআই ফোরামে যোগ দিল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ওপেন ফোরাম ফর এআই (ওএফএআই) তে সম্প্রতি যোগদান করেছে। নৈতিকভাবে মানবকেন্দ্রিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এর অগ্রগতিকে এগিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক এই ফোরামটি গড়ে তুলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটি। 

২০২৪ সালে এই ফোরামটি যাত্রা শুরু করে। আন্তর্জাতিক এই ফোরামটিতে রয়েছে বিভিন্ন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সিভিল সোসাইটি, অলাভজনক সংস্থা, সরকার ও ইন্ডাস্ট্রি। এর লক্ষ্য হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংক্রান্ত কৌশল ও শাসন ব্যবস্থায় জনস্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে আরও উন্মুক্ত ও জবাবদিহিমূলক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা। 

এই জোটের একটি প্রধান লক্ষ্য হলো এমন প্রযুক্তিগত কাঠামো ও প্রোটোটাইপ তৈরি করা যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে ‘উন্মুক্ততা’ বলতে ঠিক কী বোঝায় এবং তা কীভাবে বাস্তবে প্রয়োগ করা যেতে পারে সেটা নির্ধারণ করা। এর মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংক্রান্ত নীতি ও বাস্তব প্রয়োগ আরও স্বচ্ছ ও ন্যায্য হয়ে উঠবে।

এই ফোরামের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো গবেষণা। এই গবেষণাগুলোতে দেখা হবে সফটওয়্যারের বাইরে মডেল ও ডেটাতেও ওপেন–সোর্স নীতিমালা প্রয়োগ করা যায় কিনা। এটির লক্ষ্য হলো উন্মুক্ত, নিরাপদ ও স্বচ্ছ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) উন্নয়নের জন্য একটি মানদণ্ড তৈরি করা।

ফোরামের বিভিন্ন ওয়ার্কিং গ্রুপ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংক্রান্ত গোপনীয়তা সুরক্ষা, প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন মানদণ্ড এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণসহ গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত ইস্যু নিয়ে কাজ করছে।

বর্তমান উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে গবেষক, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে যৌথ গবেষণা অগ্রগতি, নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি তৈরি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নীতি ও প্রোটোটাইপ নকশায় অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে ফোরামের আয়োজন করা।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই ফোরামে যোগদানকে স্বাগত জানিয়েছেন ওএফএআই এর নির্বাহী পরিচালক এবং ওপেন সোর্স প্রোগ্রামস অফিস ডিরেক্টর সায়ীদ চৌধুরী। তিনি বলেন, “ আমরা বিশ্বাস করি যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা  (এআই) এর উন্নয়ন কেবল বৃহৎ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারা হলে হবে না, এটি হতে হবে বহুমতের ভিত্তিতে।”  তিনি আরো বলেন, “ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি বহুমাত্রিক শিক্ষা আর সামাজিক উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বিশ্বে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি আমাদের এই ফোরামে যোগ দেওয়ায় ওএফএআই বৈশ্বিক পরিসর আরও বড় হলো এবং আমাদের বৈশ্বিক সহযোগিতার অঙ্গীকার আরো বলিষ্ঠ হলো।”

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি গ্লোবাল সাউথ থেকে উন্নয়ন ও উদ্ভাবনকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিশীল সমাজ গড়ে তুলতে বিভিন্ন সেক্টরের সাথে কোলাবোরেশন করছে, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে এগিয়ে নিচ্ছে এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে জ্ঞানের বিনিময় করে চলছে। 

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ওপেন ফোরাম ফর এআইতে যোগদানের আলোচনা শুরু হয়েছিল এই বছরের জুলাই মাসে। সে সময় আমেরিকা সফর করছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ ফারহাত। তিনি তখন নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দফতরে টেকসই উন্নয়ন নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি পলিটিক্যাল ফোরামে বক্তব্য দেন।

ফোরামটির সদস্য হিসেবে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এখন থেকে ন্যায়সঙ্গত ও দায়িত্বশীল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) উন্নয়নে যৌথ গবেষণা, নীতি আলোচনা, প্রোটোটাইপ তৈরি এবং সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ফারহাত আনোয়ার বলেন, “এআই বিশ্বকে বদলে দিচ্ছে। দায়িত্ব ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পরিবর্তনের এই যাত্রায় নেতৃত্ব নিতে হবে।” তিনি আরো বলেন, “এই ফোরামের সঙ্গে যুক্ত হওয়াটা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির নৈতিক উদ্ভাবনের অঙ্গীকারকে আরও শক্তিশালী করেছে। সেই সাথে আমরা আশা করি এই ফোরাম মানবকল্যাণে কাজ করে এমন প্রযুক্তি গঠনে সক্ষম ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তুলবে।”

এই কোলাবোরেশন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে আরেকটি মাইলফলক। এটি উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার এসডিজি-৪ (গুণগত শিক্ষা), এসডিজি-৯ (শিল্প, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো), এসডিজি-১০ (অসমতা হ্রাস), এসডিজি-১৬ (শান্তি, ন্যায় বিচার ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান) এবং এসডিজি-১৭ (লক্ষ্যের জন্য অংশীদারত্ব) অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।