
ইউনেস্কো সাধারণ পরিষদে সভাপতি নির্বাচিত বাংলাদেশ
ইউনেস্কোর ৪৩তম সাধারণ পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কো নির্বাহী বোর্ডের ২২২তম অধিবেশনে অনুষ্ঠিত ভোটে বাংলাদেশের প্রার্থী রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা ৩০-২৭ ভোটে জাপানকে পরাজিত করে এই পদে নির্বাচিত হন।
শুরুতে বাংলাদেশ, জাপান, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া—এই চারটি দেশ সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও সেপ্টেম্বরে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়।
মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ইউনেস্কোর ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সংস্থাটির সর্বোচ্চ পদে নির্বাচিত হলো।
রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা, যিনি বর্তমানে ইউনেস্কোয় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ফ্রান্স, মোনাকো ও আইভরি কোস্টে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি ইউনেস্কো সাধারণ পরিষদের পরবর্তী অধিবেশনে (এই মাসের শেষে উজবেকিস্তানের সমরকন্দে অনুষ্ঠিতব্য) সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তিনি রোমানিয়ার রাষ্ট্রদূত সিমোনা মিরেলা মিকুলেস্কুর উত্তরসূরি হবেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার এবং সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বাংলাদেশের এই ঐতিহাসিক সাফল্যের জন্য ইউনেসকো নির্বাহী বোর্ডকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
ড. ইউনূস একে বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘এটি জাতির জন্য এক গর্বের মুহূর্ত।’ তিনি এই সফল অভিযানের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার বলেন, ‘ইউনেসকোর সর্বোচ্চ পদে এই নির্বাচন বাংলাদেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও কলা ক্ষেত্রে অবদানকে বৈশ্বিক পর্যায়ে তুলে ধরবে। এটি এক বিরল সম্মান।’
সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘সাম্প্রতিক ইউনেস্কো অধিবেশনগুলোতে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ ইতিমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছে। এবার এই পদ আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও সৃষ্টিশীলতার উজ্জ্বল চিত্র বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার এক শক্তিশালী সুযোগ এনে দিল।’
২০২১ সালে ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা নির্বাহী বোর্ড সদস্যদের আস্থার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি আমাদের দেশের জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন। আমি ইউনেস্কোর মূল আদর্শ ও উদ্দেশ্য রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।’