খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ, বিদেশি সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আজ গভীর শোক প্রকাশ করেছে। এছাড়া তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকারকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে এবং বাংলাদেশের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের আধুনিক ইতিহাস গঠনে খালেদা জিয়ার অবদানের কথা স্বীকার করে শোক প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাস এক শোকবার্তায় জানিয়েছে, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র গভীর শোক প্রকাশ করছে।’
দূতাবাস তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকারকে স্মরণ করে বলেছে, ‘বেগম জিয়া বাংলাদেশের আধুনিক ইতিহাস গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এবং তাঁর নেতৃত্ব বাংলাদেশের উন্নয়ন এগিয়ে নিতে সহায়ক ছিল।’
যুক্তরাষ্ট্রের মতোই রাশিয়া বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তাঁর সময়ে দ্বিপাক্ষিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকার কথা স্মরণ করেছে।
বাংলাদেশে রাশিয়ার দূতাবাস শোকবার্তায় জানায়, ‘তিনবার সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আমাদের দেশের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য রাশিয়া তাঁকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করবে।’
চীনও দেশনেত্রীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশ ও বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘চীনের জনগণ তাঁকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও সর্বোচ্চ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’
তিনি আরও বলেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির সঙ্গে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে।
ভারতও বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘ঢাকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত।’
তিনি আরও বলেন, তাঁর পরিবার ও বাংলাদেশের সকল মানুষের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাঁর ও পরিবারের সকলকে এই শোক সহ্য করার শক্তি দিন।’
মোদি স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর অবদান এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা সর্বদা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৫ সালে ঢাকায় তাঁর সঙ্গে আমার উষ্ণ সাক্ষাৎকারের কথা মনে পড়ে। আমরা আশা করি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ও উত্তরাধিকার আমাদের অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার শান্তি কামনা করেন মোদি।
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিও শোক প্রকাশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে তাঁর আজীবন সেবা এক স্থায়ী উত্তরাধিকার হয়ে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেগম জিয়া পাকিস্তানের এক নিবেদিত বন্ধু ছিলেন। এই শোকের সময়ে আমার সরকার এবং পাকিস্তানের জনগণ বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে রয়েছে। আমাদের চিন্তা ও প্রার্থনা তাঁর পরিবার, বন্ধু এবং বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আছে। আল্লাহ তাঁর আত্মাকে শান্তি দিন। আমিন।’
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর পরিবার ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। তাঁর নেতৃত্ব ও সেবা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
যুক্তরাজ্যও গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাজ্যও বেগম জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়,‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’
দূতাবাস আরও জানায়, ‘তাঁর পরিবার, বন্ধু এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
এছাড়া, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে বেগম জিয়ার ভূমিকার কথা স্মরণ করেছে জাপান।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সম্মানিত চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুসংবাদে আমরা গভীর শোকাহত।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বেগম খালেদা জিয়া দু’বার জাপান সফর করেছেন এবং দুই দেশের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।’
জার্মানি তাঁর দীর্ঘ জনসেবা ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকারকে সম্মান জানিয়েছে।
বাংলাদেশে জার্মান দূতাবাস জানায়, ‘বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, দেশের প্রথম নারী সরকারপ্রধান, সাবেক ফার্স্ট লেডি এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) দীর্ঘদিনের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি।’
দূতাবাস আরো বলেছে, তাঁর দীর্ঘ যাপিত জীবনে বেগম জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
জার্মানি আরও জানিয়েছে, ‘২০০৪ সালে ঢাকায় জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী যোশকা ফিশারের সফর এবং ২০১১ সালে জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিশ্চিয়ান উলফের সফরে তাঁর সঙ্গে বৈঠকের কথা আমরা স্মরণ করছি।’
বার্তায় বলা হয়েছে, ‘জার্মানি দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাঁর আত্মা শান্তিতে থাকুক।’
ফ্রান্স তাঁর জাতীয় অবদানকে তুলে ধরেছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি দূতাবাস জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশের প্রথম নারী সরকারপ্রধান বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি।’
দূতাবাস আরও জানায়, দীর্ঘ যাপিত জীবনে বেগম জিয়া বাংলাদেশের মানুষের জীবন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
দূতাবাস জানায়, এই শোকের সময়ে আমরা তাঁর পরিবার, দল এবং বাংলাদেশের জনগণের পাশে রয়েছি। তাঁর উত্তরাধিকার স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমাদের সমবেদনা।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
জাতিসংঘ বাংলাদেশের প্রতি সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি।’
তারা আরও বলেছে, ‘এই শোকের সময়ে আমরা তাঁর পরিবার ও প্রিয়জনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি সংহতি পুনর্ব্যক্ত করছি।’
আঞ্চলিক সংস্থা বিমসটেকও শোক প্রকাশ করেছে।
বিমসটেক সচিবালয় জানিয়েছে, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমরা আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। তাঁর আত্মা চিরশান্তিতে থাকুক।’

























