
কম্প্রেসর উৎপাদনে জার্মানির সুনাম বিশ্বজুড়েই। আর তাদের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান ‘সিকপ জিএমবিএইচ’। এদিকে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন ও বর্তমানে নিজেদের কারখানায় আন্তর্জাতিক মানের কমপ্রেসর উৎপাদন করছে বেশ কিছুদিন ধরেই।
তারই ধারাবাহিকতায় এবার জার্মানভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষ হাইজহোল্ড কম্প্রেসার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘সিকপ জিএমবিএইচ’ এ কম্প্রেসরের যন্ত্রাংশ সরবরাহ করছে বাংলাদেশি ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। সিকপের সঙ্গে এক দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যিক চুক্তি করেছে ওয়ালটন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মে ২০২১ইং) ওয়ালটেরন করপোরেট অফিসে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিজনেস এগ্রিমেন্ট সাইনিং অনুষ্ঠানের আয়োজনে সিকপ ও ওয়ালটনের মধ্যে এই দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে সিকপ গ্রুপের পক্ষে প্রকিউরমেন্ট ডিরেক্টর জেরাল্ড কোবের ও ওয়ালটনের পক্ষে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিনেটর পক্ষে (আইবিইউ) প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম চুক্তিতে সই করেন।
এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জনাব এস এম জাহিদ হাসান, ওয়ালটন কম্প্রেসরের চিফ অপারেটিং অফিসার নাসির উদ্দিন মণ্ডল, ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আব্দুর রউফ ও রেজাউল ইসলাম মিনার, সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর আরিফিন সহ আরো অনেকেই।
এছাড়াও অনলাইনের মাধ্যমে ভার্চুয়ালী যুক্ত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডিরেক্টর নিশাত তাসনিম শুচি সহ অস্ট্রিয়ায় বাংলাদেশি দূতাবাসের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত এবং ওয়ালটন কম্প্রেসরের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার রবিউল আলম।
ওয়ালটন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিনেটর(আইবিইউ) প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম বলেন, ওয়ালটন ভিশন- ‘গো গ্লোবাল ২০৩০’ নির্ধারণ করেছে। সেই লক্ষ্য পূরণে ২০২১ সালে ইউরোপের ২১টি দেশে রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণের জন্য কাজ করছে ওয়ালটন।
সিকপ ও ওয়ালটনের মধ্যকার সমব্যবসায়িক চুক্তিকে সকলেই স্বাগত জানান এবং প্রত্যাশা করেন ওয়ালটনের সঙ্গে সিকপের এই ব্যবসায়িক সম্পর্ক বহুদূর এগিয়ে যাবে।
সিকপ জিএমবিএইচ প্রতিনিধি জেরাল্ড কোবের বলেন, কম্প্রেসরের মেটাল কাস্টিং পার্টস নেওয়ার মধ্য দিয়ে ওয়ালটনের সঙ্গে যে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যিক পথচলা শুরু করতে যাচ্ছে সিকপ ভবিষ্যতে কম্প্রেসরের অন্যান্য যন্ত্রাংশগুলোও ওয়ালটন থেকে নেওয়ার ব্যাপারে তিনি দৃঢ় আশাবাদি তিনি।
ওয়ালটনে বর্তমানে বিশ্বের সর্বাধুনিক ও কাটিংএজ প্রযুক্তির মেশিনারিজের সমন্বয়ে তৈরি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে ‘সাইলেন্ট ও ডিউর্যাবল’ কম্প্রেসর। হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের রয়েছে মেটাল কাস্টিং ফাউন্ড্রি এবং গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির টেস্টিং ল্যাব ও যন্ত্রপাতি। ইতিমধ্যে নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে তুরস্ক, ইটালি, অস্ট্রিয়া, স্লোভাকিয়া, ইরাকসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কম্প্রেসর ও এর যন্ত্রাংশ রপ্তানি শুরু করছে ওয়ালটন।
সিকপের সমীক্ষা অনুযায়ী কম্প্রেসার তৈরির কাঁচামাল হিসেবে বাৎসরিক ৭ মিলয়নের বেশি যন্ত্রাংশ প্রয়োজন তাদের এবং এই চাহিদার পুরোটাই তারা বাংলাদেশের টেক জায়ান্ট ওয়ালটনের তৈরি যন্ত্রাংশ দিয়েই মেটাতে চায়।
তথ্যমতে, বাংলাদেশ এশিয়ার ৮ম ও বিশ্বের ১৫তম কম্প্রেসর উৎপাদনকারী দেশ। গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ভেতরে প্রায় ১৬ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র কম্প্রেসার কারখানা এবং ওয়ালটনই একমাত্র বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান হিসাবে কমপ্রেসর উৎপাদন করছে।