ঢাকা   বুধবার ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২, ০৬ মুহররম ১৪৪৭

মৃত্যুর কারণ যখন হয়ে উঠে লবণ বা চিনি

স্বাস্থ্য

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ৯ মার্চ ২০২২

আপডেট: ১৯:১৮, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মৃত্যুর কারণ যখন হয়ে উঠে লবণ বা চিনি

খাবারের টেবিলে অনেকেরই পাতে অতিরিক্ত লবণ নেয়া বা চায়ের বাড়তি চিনি নেয়ার অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বল্প মাত্রার এরকম কাঁচা লবণ বা চিনি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে। মানবদেহের জন্য লবণ বা চিনির প্রয়োজন রয়েছে, কিন্তু তার মাত্রা রয়েছে। মানুষ প্রতিদিন যে নানা ধরনের খাবার গ্রহণ করে থাকে, তার ভেতরেও লবণ বা চিনির উপস্থিতি থাকে। একজন মানুষের প্রতিদিন যতটা লবণ বা চিনি খাওয়া উচিত, খাবার থেকেই অনেক সময় তার চেয়ে বেশি শরীরে প্রবেশ করে। ফলে যখন কোন মানুষ খাবার টেবিলে বা চায়ের সঙ্গে বা অন্য কোন ভাবে বাড়তি লবণ বা চিনি গ্রহণ করে, সেটা তার জন্য ঝুঁকির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। পুষ্টিবিদ ফারজানা আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, মানুষের শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইডের বয়স অনুযায়ী চাহিদা আছে। কিন্তু কারও যদি লিভার, কিডনি বা বড় জটিলতা থাকে, তখন সেটার বেশি বা কম হলে সমস্যা তৈরি করতে পারে। ''আমরা সরাসরি লবণ খেতে একেবারেই মানা করে দেই। কিন্তু নানা খাবারের মধ্য দিয়ে একজনের শরীরে যতটুকু লবণ যাবে, তা যেন আধা চা চামচ থেকে এক চা চামচের বেশি না হয়,'' তিনি বলছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বা সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাবার অথবা রেস্তোরাঁয় খাবারে যে লবণ থাকে, সেটা নিয়ন্ত্রণের কোনো উপায় থাকে না। বিজ্ঞানীরা বলছেন, উচ্চমাত্রার ফ্রুকটোজসমৃদ্ধ কর্ন সিরাপ বা বাড়তি চিনিওয়ালা পানীয়, জুস ড্রিংক, মধু, বা সাদা চিনি এগুলো হৃদযন্ত্রের সমস্যা তৈরি করতে পারে, কারণ তা ধমনির ভেতর ট্রাইগ্লিসারাইড জাতীয় চর্বি জমাতে ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন জরিপে এই বাড়তি যোগ করা চিনি সমৃদ্ধ খাবার বা পানীয়ের সাথে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার সম্পর্ক দেখা গেছে। এটি ক্যান্সারের ঝুঁকিও অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। চিনি বা অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার স্থূলতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে। যেসব খাবার - যেমন বিভিন্ন ফলের রস বা মিশ্রণ এবং সিরাপ খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। আবার চা বা কফি, শরবতের সঙ্গে সরাসরি চিনি মিশিয়েও খাওয়া হয়। একে বলা হয় বাড়তি চিনি। উভয় ক্ষেত্রে শরীরের সরাসরি চিনি প্রবেশ করে। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বলছে, একজন ব্যক্তি প্রতিদিন যে পরিমাণ খাবার গ্রহণ করে, তার ১০ শতাংশের কম অতিরিক্ত চিনি বা বাড়তি চিনি খাওয়া উচিত। চকলেটের বাইরে চা এবং কফি এজন্য অনেকাংশে দায়ী। বিশ্বের অনেক দেশ চিনির ওপর বাড়তি কর বসিয়ে মিষ্টি খাওয়া কমানোর চেষ্টা করছে।

জনপ্রিয়