ঢাকা   বুধবার ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল সারা দেশ

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল সারা দেশ

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল সারা দেশ

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের (৩৫) হত্যার ঘটনায় ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল সারা দেশ।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) হিন্দু উগ্রবাদী সংগঠন ইসকনের সাবেক নেতা ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে তার অনুসারীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় আদালতের নিচতলায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা আলিফকে পাশের জঙ্গল সিনেমা লেনে নিয়ে গিয়ে মারধরের পর কুপিয়ে হত্যা করে। 

এ ঘটনার পরই সারা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন নিন্দা জানিয়ে তাদের নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে এ হত্যাকাণ্ডকে জঘন্য এবং নিন্দনীয় অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, একটি গোষ্ঠী পতিত স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশকে অস্থির করার জন্য ক্রমাগতভাবে দুরভিসন্ধি ও অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অস্থির করে তুলতে চায়। দেশপ্রেমিক জনগণ তাদের দুরভিসন্ধির ব্যাপারে পরিপূর্ণ সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ। তাদের অপচেষ্টা অতীতে যেমন ব্যর্থ হয়েছে, আগামীতেও ব্যর্থ হবে ইনশাআল্লাহ।

ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান বলেন, দেশবিরোধী বিশ্বাসঘাতক চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে উগ্রহিন্দুত্ববাদী ইসকনের কর্মী-সমর্থকরা চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সন্ত্রাসী আক্রমণ চালিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে দিনের আলোতে জনসম্মুখে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ভারতের উসকানি ও মদদে এই ষড়যন্ত্রমূলক অরাজকতা তৈরি করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত ইসকনের কর্মী-সমর্থকদের দ্রুত গ্রেফতার করে শহীদ আলিফ হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে। সন্ত্রাসী কার্যক্রমের দায়ে হিন্দুত্ববাদী ইসকনকে অতিসত্বর নিষিদ্ধ করতে হবে।’

তারা আরো বলেন, ‘মুসলমানের রক্তখোর ভারতের হিন্দুত্ববাদী শাসকগোষ্ঠী এদেশে হিন্দু কার্ড খেলে তাদের আধিপত্যবাদ কায়েম রাখতে চায়। তাদের সেবাদাস ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর থেকে ভারত উন্মাদ হয়ে আছে। সে কারণে একের পর এক ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি। ভারতের কোনো ফাঁদে পা না দিতে সাধারণ সনাতনী হিন্দু ভাই-বোনদের প্রতি আমরা জোর আহ্বান করছি। আর যারা ভারতের চক্রান্তের সাথে একীভূত হয়ে দেশবিরোধী অরাজকতা তৈরি করতে সক্রিয়, তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার নজির দেখাতে হবে সরকারকে। আমরা আজকের ঘটনায় শান্ত ও সংযত থেকেছি বটে। কিন্তু এদেশের মুসলমানদের ধৈর্যেরও সীমা রয়েছে তা মাথায় রাখতে হবে।’

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ : ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেরর পাদদেশে রাত ৮টায় এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, একটা গ্রুপ দিল্লি বসে আমাদের বিভাজন করার প্রেসক্রিপশন দিচ্ছে ।

বিক্ষোভ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘ভারতে মুসলমানদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। আর সেই নির্যাতন আমরা আজকে বাংলাদেশেও দেখতে পেয়েছি। তারা সংখ্যালঘুর ট্রাম্প কার্ড ব্যবহার করে উস্কানিতে দিচ্ছে। আমরা তাদের পাতানো ফাঁদে পা দিব না। মুসলমানদের সব সময় ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। আমরা আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের অধিকার নিশ্চিত করব। আমরা শিগগির এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

আরেক শিক্ষার্থী জিহাদুল ইসলাম বলেন, ‘২৪-এর গণঅভ্যুত্থান থেকে শুরু করে একটা গ্রুপ দিল্লিতে বসে আমাদের বিভাজন করার প্রেসক্রিপশন দিচ্ছে। হারপিক মজুমদারসহ সকল খুনিরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসে জাতিকে উস্কানি দিচ্ছেন। এ বাংলার মাটিতে আপনাদের বিচার হবে। ৯০ ভাগ মুসলমানদের দেশে সংখ্যালঘুদের আমরা সব সময় নিরাপত্তা দিয়ে আসছি। আজকে যারা সাইফুল ভাইকে হত্যা করেছে, তাদের সুষ্ঠু বিচারের আহ্বান করছি।’

এ সময় তারা ‘ইসকন তুই জঙ্গি, ফ্যাসিবাদের সঙ্গী’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাও রুখে দাও’, ‘উগ্রবাদের আস্তানা এ বাংলায় হবে না’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

পটুয়াখালীতে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে পটুয়াখালীতে মশাল মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে একটি মশাল মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি চৌরাস্তায় গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

এদিকে একই দাবিতে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ, পটুয়াখালী সরকারি কলেজ ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে হাজারো শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভকারীরা ইসকনকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে স্লোগান দিয়ে নিষিদ্ধের দাবি জানান।

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ফেনীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্র-জনতা।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাত ১০টার দি‌কে শহরের শহীদ মিনার থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ট্রাংক রোড, বড় মসজিদ, মডেল থানা প্রদক্ষিণ করে খেজুর চত্ত্বরে এসে শেষ হয়।

মিছিল শেষে উপস্থিত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মোহাইমিন তাজিম, ওমর ফারুক শুভ ও স্বেচ্ছাসেবক ওসমান গণি রাসেল।

এর আগে মিছিল করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুব সংগঠন।

বক্তারা বলেন, উগ্র-হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ও তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তারা প্রকাশ্য-দিবালোকে আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে, মসজিদে হামলা করেছে। সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করে নিজেদের সন্ত্রাসী স্বরুপ প্রকাশ করেছে।

তারা আরো বলেন, এখন সময় এসেছে দেশের সকল মানুষ এক হয়ে ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার। দেশের পতিত আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিচ্ছিন্নতাবাদী হিন্দুদের সাথে মিশে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে মেতেছে। যেকোনো মূল্যে এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার ( ২৬ নভেম্বর) রাত ৯টায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবু সাঈদ গেট থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মডার্ন মোড় ঘুরে আবারও আবু শহীদ চত্বরে এসে শেষ হয় মিছিলটি। কয়েক হাজার শিক্ষার্থী মিছিলে অংশ নেন। তারা হত্যাকারী চিন্ময় অনুসারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবিতে নানা স্লোগান দেয়।

পরে সমাবেশ বক্তব্য রাখেন মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব রহমত আলী, জাকির হোসেন, সৌরভ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদিদের উস্কানিতে এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন সনাতন জাগরণ মঞ্চের ব্যানারে দেশে পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা তৈরীর চেষ্টা করছে। দেশে সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন সম্পূর্ণ নিরাপদে থাকা সত্ত্বেও সন্ত্রাসী চিন্ময়ের তথাকথিত অনুসারীরা আদালতে প্রকাশ্য দিবালোকে গলাকেটে রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তাকে খুন করেছে। মসজিদে হামলা, ভাঙচুর করেছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে।’

তারা আরো বলেন, ‘খুনিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে আবারো ছাত্র জনতার বিপ্লব শুরু হবে। একই সাথে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনের কার্যক্রম বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবিও জানান তারা। এ সময় দেশবাসীকে উস্কানিতে পা না দিয়ে শান্ত থাকারও আহ্বান জানান বক্তারা।’

দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত ও দেশে উগ্রবাদী কার্যক্রম করার দায়ে হিন্দুত্ববাদী উগ্রসংগঠন ইসকনকে অবিলম্বে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে জবি ক্যম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ দাবি জানায় তারা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ ইসকন নিষিদ্ধ’, ‘আমার সোনার বাংলায় ইসকনের ঠাঁই নাই’, ‘ইসকনের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘আমার ভাই খুন কেন, প্রশাসন জবাব চাই’- স্লোগান দেয়।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বলেন, ‘বাংলাদেশকে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কিছুদিন ধরে চক্রান্ত করে যাচ্ছে উগ্রবাদী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন। তারই প্রতিচ্ছবি চট্টগ্রামে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ ভাইয়ের নৃশংস হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইন অনুযায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

নাইমুর রহমান নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ভারত আমাদের সার্বভৌমত্বকে ভেঙে দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চাচ্ছে। ইসকান তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাই ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হোক। সাইফুল ইসলাম আলিফ ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা হোক।’

এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস্ সোসাইটির সভাপতি জুনায়েদ মাসুদ বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে ভারতের মদদে এদেশের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন অখণ্ড ভারত করার দিবাস্বপ্ন দেখে যাচ্ছে। আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম দেশে এই ইসকন বিভিন্ন সময় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চেয়েছে আজও করছে। গত ৫ আগস্টে পরাজিত শক্তি ফ্যাসিস্ট হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে সেখানে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতেছে। তার সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উগ্র-হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন আদালত চত্বরেই এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করে। আমরা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। দেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হোক তা আমরা চাই না। অবিলম্বে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে বিচার করার জোর দাবি জানাই।’

চট্টগ্রামে আদালত প্রাঙ্গনে ইসকন-সমর্থক কর্তৃক আইনজীবীকে হত্যার প্রতিবাদ ও ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রধান ফটকে গিয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়।

এতে দেড় হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখা যায়।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘সনাতন-মুসলিম ভাই-ভাই, বাংলাদেশে ইসকনের কোনো ঠাঁই নাই’, ‘সনাতন-মুসলিম ভাই-ভাই, হাবিপ্রবিতে ইসকনের ঠাঁই না’, ‘অ্যাকশান অ্যাকশান ডাইরেক্ট অ্যাকশান, ইসকনের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ইসকনের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘জঙ্গিবাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘দিল্লী না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’-সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গনে ইসকন কর্তৃক আইনজীবী হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা সনাতন-মুসলিম ভাই-ভাই। সনাতন আর ইসকনকে আমরা আলাদা মনে করি। ইসকন মূলত একটি উগ্রবাদী সংগঠন। বাংলাদেশে ভারতীয় অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে ইসকন। আর ইসকনকে সমর্থন দিয়ে যারাই মাঠে নামবে আমরা তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য সবসময় প্রস্তুত। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেনো ইসকনকে উগ্রবাদী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।’

এ সময় তারা আরো বলেন, ‘ছাত্রশিবির বলেন, ছাত্রদল বলেন, তাবলীগ বলেন- এই বিষয়ে আমরা সবাই একতাবদ্ধ। আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে যে বা যারা ষড়যন্ত্র করছে বা করবে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সেই ষড়যন্ত্র রুখে দেবো।’

বুধবার জোহরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের (৩৫) গায়েবানা জানাজা এবং জানাজা শেষে আবারো বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।