
শাবান একটা পবিত্র মাস। গত ৪/৩/২০২২ থেকে শাবান মাস শুরু হয়। কিন্তু আমাদের মাঝে এখনো রমজানের প্রস্তুতি শুরু হয় নি মনে হয়।এইটাই আমাদের নবী (সা) বলেছেন এটা এমন মাস যা থেকে মানুষ গাফেল থাকে, এটা রজব ও রমাদানের মাঝখানে।(আহমাদ, নাসাঈ)
গাফেল থাকা মানে হলো কোন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান না থাকা। এই মাস নিয়ে আজ আমাদের উম্মাতের কাজ দেখলে মনে হয় এই গাফলাতি আমাদের পেয়ে বসেছে।
এই মাসে আমাদের নবী (স) ও তাঁর সাহাবিগণ যা করতেন তা আমাদের করা ভালো। যেমনঃ
১. এই মাসে মানুষের বার্ষিক আমল আল্লাহর কাছে যায়। কাজেই আমল যখন যাবে তখন আমাদেরকে নানা ইবাদাতে ব্যস্ত রাখা উচিৎ। গুনাহের কাজ বন্ধ রাখা আবশ্যক। বিশেষ করা রোযা অবস্থায় যেন আমাদের আমল আল্লাহর কাছে যায় তার চেষ্টা আমাদের নবী (স) করতেন।
২. এই মাসে আমাদের নবী (স) অন্যন্য ইবাদাতের সাথে সিয়াম বেশি রাখতেন। শেষের কয়েকদিন ছাড়া রোজা ভাঙতে চাইতেন না। আমাদের যাদের কাযা রোযা আছে, বা নফল রোযার ইচ্ছা আছে সেটা করা উচিৎ। আমাদের আম্মাজান আইশাহ (রা) শা'বানে তার আগের বছরের কাযা সিয়ামগুলো রেখে দিতেন।
৩. রমাদানের পরে এই মাসটি ছিলো আমাদের নবীর (সা) কাছে বেশি প্রিয়। কাজেই একে নানা ইবাদাতে বর্ণিল করে তুললে রমাদ্বান আমাদের কাছে সহজ হয়ে যাবে।
৪. এই মাসের মধ্যরাত একটা গুরুত্বপূর্ণ রাত। আল্লাহ অনেককে ক্ষমা করেন। তবে ঐ রাতে আল্লাহ মুশরিক ও মুশাহিনকে মাফ করেন না। মুশাহিন মানে পরস্পরে হিংসা, বিদ্বেষ ও শত্রুতা প্রদর্শনকারী। এর মানে শাবানে আল্লাহ আপনার অন্তরকে হিংসা ও বিদ্বেষমুক্ত করে রমাদ্বানে আপনাকে জান্নাতের উপযুক্ত করতে চাচ্ছেন।
৫. আমাদের সালাফগণের কেউ কেউ এই মাসকে শাহরুল কুররা' বা ক্বারীদের মাস বলতেন। মানে রমাদানের কিরাআতুল কুরআন যেন এই মাসের কিরাআত দেখেই বুঝা যায়। কাজেই রমাদানের আগেই যেন অন্তত একবার কুরআন পড়ে শেষ করা যায় তার চেষ্টা থাকা উচিৎ।
৬. এই মাসকে ঘিরে আছে বিদআতের সমারোহ। বিশেষ করে এই মাসের মধ্যরাতকে ভাগ্য-রজনী বলে কেউ কেউ। যেটা সম্পূর্ণ ভুল শুধু নয়, বরং তা বিশ্বাস করা কুরআনের সাথে সাংঘর্ষিক। ভাগ্য বন্টন হয় রমদানে লাইলাতুল ক্বাদরে। আমাদের সমাজে এই রাতকে ঘিরে মীলাদ পড়ার ধুম লেগে যায়।