ঢাকা   মঙ্গলবার ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

জার্মানিতে ব্যাচেলর পড়া

বৃত্তি ও উচ্চ শিক্ষা

প্রকাশিত: ১৪:৩৩, ১৩ ডিসেম্বর ২০২১

আপডেট: ১৪:৩৪, ১৩ ডিসেম্বর ২০২১

জার্মানিতে ব্যাচেলর পড়া

দেশের বাইরে পড়াশোনার স্বপ্নটা ইন্টারমিডিয়েট শেষ করার পর থেকেই শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেটা মাস্টার্সের পরই প্ল্যান ছিলো, ব্যাচেলর করতে আসার চিন্তা কখনো মাথায় আসেনি। ছোটবেলা থেকেই ড্রিম কান্ট্রি ছিলো নরওয়ে এবং সেটাকে ভেবেই সামনে এগুচ্ছিলাম। কিন্তু ভাগ্য আর পরিস্থিতি আমার ডিসিশন চেঞ্জ করিয়ে জার্মানির পথেই নিয়ে আসলো! যদিও জ্ঞান হবার পর থেকেই আমি জার্মান ফুটবল টিমের ডাই হার্ড ফ্যান ছিলাম তাও কখনো ভূলেও জার্মানিতে ট্যুর প্ল্যানও(!) ছিলো না....! তবে সবকিছুর জন্যই আলহামদুলিল্লাহ... যারা নতুন এবং ব্যাচেলর স্টাডিস সম্পর্কে একেবারেই কোন ধারনা নেই তাদের জন্য ব্যাচেলর কোর্সে এপ্লাই নিয়ে লিখতে যাচ্ছি। ভার্সিটি সিলেকশন: ডাড ওয়েবসাইটে (www.daad.de/en) গিয়ে আপনার রিলেভ্যান্ট কোর্স সার্চ করে ভার্সিটি এবং কোর্স সিলেক্ট করুন। তারপর ভার্সিটির রিকুয়ারমেন্ট অনুযায়ী কাগজপত্র স্ক্যান করে সফটকপি এবং নোটারাইজড কপি ভার্সিটি বা ইউনিএসিস্ট (https://www.uni-assist.de/en)  যেখানে বলা থাকবে সেখানে আপলোড করতে হবে বা জার্মানিতে পাঠাতে হবে। ব্যাচেলরে এডমিশনের জন্য যেসব ডকুমেন্টস প্রয়োজন: ১.এস.এস.সি ট্রান্সক্রিপ্ট + সার্টিফিকেট ২.এইচ.এস.সি ট্রান্সক্রিপ্ট + সার্টিফিকেট ৩.অনার্স ২৫% কোর্স কম্পলিটেশন /১ বছরের ট্রান্সক্রিপ্ট ৪. IELTS সার্টিফিকেট/মিডিয়াম অব ইন্সট্রাকশন/জার্মান ল্যাংগুয়েজ সার্টিফিকেট ৫.ইউরোপাস সিভি; ৬.একাডেমিক মোটিভেশনাল লেটার(কিছু ইউনিভার্সিটিতে দরকার হয়) ৭.হেলথ ইন্সুইরেন্স সার্টিফিকেট (কিছু ইউনিভার্সিটিতে দরকার হয়) ৮.পাসপোর্ট সাইজ ছবি। জার্মানিতে ব্যাচেলরে এপ্লাই করার দুইটা সেশন। -সামার সেশন(অক্টোবর ১৫-জানুয়ারি ১৫) এবং -উইন্টার(এপ্রিল ১৫-জুলাই ১৫)। *** অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে, আপনি অমুক কোর্সে অনার্স করেছেন,তাহলে তমুক কোর্সে যেতে পারবেন কিনা? -সোজা কথায় বলতে গেলে, আপনি যদি সাইন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের হয়ে থাকেন তাহলে সাইন্সের যেকোন সাবজেক্টেই এপ্লাই করতে পারবেন।কিন্তু যদি আপনি সাইন্সের হয়ে আর্টস/কমার্সের কোন সাবজেক্টে এপ্লাই করেন তাহলে হয়ত অফার লেটার পাবেন কিন্তু এম্বাসিতে আপনাকে রিজেক্ট করার চান্স থাকবে... ***ব্যাচেলরে কি স্কলারশিপ নিয়ে জার্মানিতে যাওয়া যাবে? -না।ব্যাচেলর কোর্সে সরাসরি কোন স্কলারশিপ দেশ থেকে আপনি নিয়ে আসতে পারবেন না। তবে এখানে এসে আপনি ভার্সিটিতে মেইল করে স্কলারশিপের খোজ করতে পারেন বা ভাল রেজাল্ট করলে প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট এমাউন্টের স্কলারশিপ পাবেন। ইউনি এসিস্ট প্রসেসিং এবং পরবর্তী এপ্লাই: কিছু ইউনিভার্সিটি তাদের প্রসেসিং ইউনি এসিস্টের সাহায্যে ডিরেক্ট করা হয়(হকশৌলে রাইন ওয়াল)। আবার কিছু ইউনিভার্সিটি তাদের এপ্লাই প্রসেসিং ইউনি এসিস্টে আংশিক করে এবং বাকিটুকু ভিপিডি পাওয়ার পর ভার্সিটি পোর্টালের মাধ্যমে করে থাকে। ইউনি এসিস্টের মাধ্যমে এপ্লাই করতে হলে আপনাকে প্রথমে ইউনি এসিস্টে একাউন্ট খুলতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করতে হবে।আপ্লোড করার পর কিছু ইউনিভার্সিটির রিকুয়ারমেন্ট অনুযায়ী আপনাকে হার্ড কপি নোটারাইজড বা জার্মান এম্বাসি কর্তৃক সত্যায়িত করে পাঠাতে হবে ইউনি এসিস্টের ঠিকানায়। ইউনি এসিস্ট থেকে একটা নির্দিষ্ট সময় পর ভিপিডি পাওয়ার পর আপনাকে ভার্সিটির পোর্টালে কাগজগুলো আপলোড করতে হবে বা যদি রিকুয়ারমেন্টে থাকে হার্ড কপি পাঠাতে হবে তাহলে ভার্সিটির ঠিকানাতেও ডকুমেন্টস পাঠাতে হবে। তারপর অফার লেটারের ডিসিশনের জন্য ওয়েট করতে হবে। ***ইউনি এসিস্ট দরকার হয় না এমন কিছু ভার্সিটির মধ্যে ডেগেনডর্ফ ইন্সটিটিউট টেকনোলজি,ইউনিভার্সিটি অব ফোর্টওয়াংগেন, ইউনিভার্সিটি অব উলম সহ আরো কিছু ভার্সিটি আছে যেগুলোর বেশীরভাগ ভার্সিটিতে ডকুমেন্টস পাঠাতে হবে বা একটা নির্দিষ্ট এমাউন্ট টিউশন ফি প্রযোজ্য। ----------------------------------- এম্বাসি এপয়েন্টমেন্ট: পাসপোর্ট নাম্বার এবং নাম ঠিকঠাক ভাবে টাইপ করে জার্মান এম্বাসি ওয়েবসাইটে গিয়ে এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে ডকুমেন্টস সাবমিশন মেইলের জন্য। ডকুমেন্টস সাবমিশন: ডকুমেন্টস গুলো সব ঠিকঠাক ভাবে গুছিয়ে ফিরতি মেইলে একটা মার্জ ফাইলে সব পাঠিয়ে দিতে হবে। এম্বাসি ইন্টারভিউ: সবকিছু ঠিক থাকলে ইন্টারভিউয়ের জন্য কল বা মেইল পাবেন।তখন সকল কাগজপত্র (মাস্টলি আপডেটেড ব্লক একাউন্ট কনফার্মেশন,হেলথ এন্ড ট্রাভেল ইন্সুইরেন্স ডকুমেন্টস) নিয়ে বারিধারা মাদানি এভিনিউতে জার্মান এম্বাসিতে উপস্থিত থাকতে হবে। ইন্টারভিউ কোন ভয়ের বিষয় না। যদিও একটু নার্ভাস লাগবেই তবু্ও কনফিডেন্ট থাকার চেষ্টা করবেন।ইন্টারভিউয়ার যা যা জিজ্ঞেস করবেন সেটা ঠিকঠাক ভাবে গুছিয়ে বলার চেষ্টা করবেন যেন তাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি না হয়। মুটামুটি যতটুক সংক্ষেপে A to Z তুলে ধরা যায় সেটারই চেষ্টা করলাম। তারপরও যদি পরিমার্জিত এবং পরিবর্ধনের প্রয়োজন হয় তাহলে পরবর্তীতে সেগুলো তুলে ধরা হবে।   লিখেছেন- মাহফুজা হক মাধু ব্যাচেলর ইন বায়োইঞ্জিনিয়ারিং রাইন ওয়াল ইউনিভার্সিটি অব এপ্লাইড সাইন্সেস, জার্মানি।