ঢাকা   মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

সুপার এইটে এক পা বাংলাদেশের

সুপার এইটে এক পা বাংলাদেশের

সুপার এইটে এক পা বাংলাদেশের

সাকিব আল হাসানের জ্বলে ওঠার দিনে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সুপার এইটের পথে গলার কাঁটা হয়ে উঠা নেদারল্যান্ডসকে আটকে দিয়েছে টাইগাররা। আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৫৯ রান তোলার পর ডাচদের আটকে দিয়েছে ৮ উইকেটে ১৩৪ রানেই। ২৫ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

সেন্ট ভিনসেন্টে ম্যাচটা ছিল বাংলাদেশের জন্যে ডু অর ডাই। সেরা আটে জায়গা পেতে নেদারল্যান্ডসকে হারাতেই হতো। ফলে খানিকটা চাপেই ছিলো দল। তবে সব চাপ কাটিয়ে তোলেন সাকিব। ব্যর্থতার বেড়াজাল ভেঙে জ্বলে ওঠেন দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে।

ফুলে ফেঁপে উঠা সব সমালোচনার জবাব যেন ব্যাট হাতেই দেন তিনি। প্রায় ২০ মাস পর টি-টোয়েন্টিতে উঁচিয়ে ধরেছেন ব্যাট। তুলে নিয়েছেন এবারের বিশ্বকাপে দলের হয়ে প্রথম ফিফটি। তাতে দলও পায় সমৃদ্ধ সংগ্রহ। ৫ উইকেটে ১৫৯; যা এবারের আসরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

অথচ টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে বেশ নড়বড়ে ছিল বাংলাদেশ। প্রথম ওভার মাত্র ৩ রান তুলে নিরাপদে কাটিয়ে দিলেও দ্বিতীয় ওভারে দ্বিতীয় বলেই ঘটে প্রথম অঘটন। ব্যাক স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন নাজমুল শান্ত৷ বাংলাদেশ অধিনায়ক আউট হন ৩ বলে ১ রানে।

পরের ওভারটা অবশ্য বাংলাদেশের পক্ষে আনেন তানজিদ তামিম। ১৮ রান নিয়ে আসেন ভিভিয়ানের ওভার থেকে। তবে এই স্বস্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, পরের ওভারের প্রথম বলে উইকেট বিলিয়ে আসেন লিটন। এঞ্জেলবার্থের দারুণ ক্যাচ হয়ে লিটন ফেরেন ১ রানে।

পরের কিছু সময় দেখেশুনে পাড়ি দিলেও পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আবারো বড় রান আসে। এবার জ্বলে ওঠেন সাকিব আল হাসান। তানজিদ তামিমকে দর্শক বানিয়ে ১৯ রান আনেন ভেন বিকের ওভার থেকে। পাওয়ার প্লেতে আসে ৫৪ রান।

এরপর থেকে সাকিব-তামিম মিলে খেলছিলেন দেখেশুনেই। তবে ৮.৩ ওভারে ক্যাচ তুলে দিয়ে তামিম ফেরেন ৩২ বলে ৪৮ রানের জুটি ভেঙে। দারুণ শুরুর পরও শেষটা রাঙাতে পারেননি তানজিদ তামিম। ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ তিনি। ২৬ বলে ৩৫ রানেই থামতে হয় তাকে।

এরপর তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে সাকিব হাল ধরার চেষ্টা চালালেও জুটি বড় হয়নি। হৃদয় আজ আর ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি, ফেরেন ১৫ বলে ৯ রানে। তবে সাকিবকে থামানো যায়নি, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ইনিংস টেনেছেন তিনি।

রিয়াদের সাথে জুটিতে ৩২ বলে ৪১ রান আনেন সাকিব৷ মাহমুদউল্লাহ আউট হন ২১ বলে ২৫ করে। তবে এর আগেই সাকিব তুলে নেন ফিফটি। ৩৮ বলে পৌঁছান এই মাইলফলকে। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৪৬ বলে ৬৪ রানে, জাকের আলি করেন ৭ বলে ১৪* রান।

জবাব দিতে নামা নেদারল্যান্ডসের পাওয়ার প্লেতেই ২ উইকেট তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। রানটাও রেখেছিল নিয়ন্ত্রণে। তবে পাওয়ার প্লে শেষ হতেই যেন বদলে যায় দৃশ্যপট। সময়ের সাথে সাথে ম্যাচে ফিরতে শুরু করে ডাচরা।

মাঝে বিক্রমজিত সিংয়ের উইকেট হারালেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অনেকটা চলে যায় নেদারল্যান্ডসের হাতে। ১৪ ওভারে ৩ উইকেটে ১০৪ রান তুলে ফেলে তারা। তবে এরপরই রিশাদ ঝলক। প্রথম দুই ওভারে সুবিধা না করতে পারলেও এবার আর ভুল করেননি।

প্রথমে ফিরিয়েছেন ভয়ংকর হয়ে উঠা এঞ্জেলবার্চকে। ২২ বলে ৩৩ করে তানজিম সাকিবকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এক বল পর নতুন মাঠে আসা বাস ডি লিডেকেও ফেরান রিশাদ। মুহূর্তেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় তারা।

সেই চাপ আরো বাড়ে ১৬.১ ওভারে মোস্তাফিজ স্কট এডওয়ার্ডে ফেরালে। ডাচ অধিনায়ক ফেরেন ২৩ বলে ২৫ করে। পরের ওভারে এসেই ভেন বিককে ফেরান রিশাদ। তাতেই শেষ হয় ডাচদের জয়ের আশা। ইনিংসের শেষ বলে প্রিঙ্গেলের উইকেট তোলে নেন তাসকিন।

তবে তাসকিনের হাত ধরেই আসে এদিন প্রথম উইকেট উপলক্ষ। উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তিনি। ফেরান মিচেল লেভিটকে। ১৬ বলে ১৮ রানে আউট হন তিনি। আর পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আঘাত আনেন তানজিম সাকিব। নিজের বলে নিজে ক্যাচ নিয়ে ফেরান ম্যাক্স ওডাউডকে (১২) পাওয়ার প্লে শেষ হয় ৩৬ রানে ২ উইকেটে।